মাদরাসা সম্পর্কে
ভান্ডারিয়া সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা
৫০-এর দশকের কথা। বৃটিশ শাসনের
করাল আগ্রাসনের শিকল থেকে সদ্য মুক্ত ভারতীয় উপমহাদেরশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ
দ্বীনি বিদ্যাপীঠ ছারছীনা দারুস সুন্নাহ মাদরাসার কোন এক কক্ষে পরীক্ষা
চলছিলো। যেখানে গার্ড হিসাবে দায়িত্বরত ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ আলিমে দ্বীন হযরত
মাও: আব্দুস সাত্তার বিহারী (রহ)। যিনি সকলের নিকট “বিহারি হুজুর” নামেই
অধিক পরিচিত ছিলেন।
পরীক্ষা চলাকালীন
সময়ে একজন ছাত্রের সহজ একটি উত্তর মনে আসছিলো না, যেটি সে অত্যন্ত ভালো
ভাবেই আয়ত্ত করেছিলো। ছাত্রটি যখন,‘উত্তর’ টি মনে করারচেষ্টা করছিলো ঠিক
তখনই দু’জন ছাত্র তার পাশে উক্ত‘উত্তর’ টি নিয়ে পরস্পর আলোচনা করছিলো। ফলে
অনায়েসেই ছাত্রটি তা শুনে ফেললো এবং খাতায় তা তুলে ফেললো।
কিন্তু
পরক্ষনেই ছাত্রটির মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা ‘তাকওয়া’ নামক শিশুটি জাগ্রত হয়ে তাকে
এই বলে ধিক্কার দিতে লাগলো যে ‘এটি প্রত্যক্ষ না হলেও পরোক্ষ নকল। যা
সম্পূর্ণরুপে হারাম কাজ। কিয়ামতের ময়দানে তুমি আল্লাহর নিকট কী জবাব দিবে
?!!!’
এ বিষয়গুলি ভাবার পরে ছাত্রটি খাতা থেকে ‘উত্তর’ টি কেটে দিলো!
বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হলো বিহারী (রহ) এর। তিনি দেখলেন যে তার প্রিয় ছাত্রটি
‘সঠিক উত্তর’ লিখে আরার তা কেটে দিলো। অবশ্য তিনি সম্পূর্ণ ঘটনা সম্পর্কে
অবহিত ছিলেন না।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সে যখন রুমে গেল তখন শুনতে পেল
যে বিহারি (রহ) তাকে ডেকে পাঠিয়েছে। হুজুরের সম্মুখে যখন সে উপস্থিত হলো
তিনি তাকে ভৎর্সনা করলেন সঠিক উত্তরটি কেটে দেওয়ার কারণে। ছাত্রটি প্রথমে
তা নির্বাক চিত্তে শুনলো অত:পর পুরো ঘটনা সবিস্তারে খুলে বললো প্রিয়
উস্তাদের নিকট। এমন অল্পবয়স্কছেলের খোদাভীরুতার পরিচয় পেয়ে তিনি অত্যন্ত
আশ্চার্যন্বিত হণ। আনন্দে তার চোখ দিয়ে মনের অজান্তেই অশ্রæ বেরিয়ে এলো।
ছাত্রটির জন্য আল্লাহর দরবারে খাস করে দু’য়া করলেন।
ইতিহাস বিখ্যাত সে
ছাত্রটি অর অন্য কেউ নয়, তিনি হলেন ভান্ডারিয়া দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা,
বাল্যকালেই “সুফীসাব” উপাধি খ্যাত মাও: মোজ্জাম্মেল হক (রহ)। নকলের
বিষক্রিয়ায় জর্জারিত আজকের ছাত্র সমাজের জন্য যিনি যুগ যুগ ধরে আর্দশের
উজ্জল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন।